দুই-তিন বছর পর হঠাৎ জরুরি কাজ ছাড়া ঢাকায় যাওয়া হয় না। কিন্তু প্রতিবার ঢাকায় এলে আমি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরতে যাবই। গত ২৫ মার্চ বগুড়া থেকে ঢাকায় এসে সকালের সেরে একটু ঘুরতে এসেছিলাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে ঢোকার পথেই দেখতে পেলাম এক নারী ও তার ছোট্ট সন্তানকে। দুজনের শরীর দেখেই বোঝা গেল খাওয়া নিয়মিত জোটে না। সন্তানের বুকের হাড় পর্যন্ত গোনা যাচ্ছে। ওই নারী খিচুড়ির মত একটু খাবার কোথাও থেকে পেয়েছিল হয়ত; তা তুলে দিচ্ছে সন্তাদের মুখে। একটু কথা বলার চেষ্টা করে জানতে পারলাম, ওদের কোনো ঘর নেই; গাছতলাই একমাত্র আশ্রয়।
একটু এগিয়ে যেতেই দেখলাম একজন বয়স্ক মানুষ শুয়ে আছেন উদ্যানে। বললেন, এটাই তার অবলম্বন; তিনি এখানেই থাকেন। তার স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে। স্ত্রী কাগজ কুড়িয়ে বিক্রি করেই যে টাকা পান তা দিয়েই দিন চলে। কখনো কখনো মুঠো মুড়ি খেয়েও দিন কেটে যায়। কখনও নুন-ভাত মেলে। আবার কখনও কখনও সারাটা দিনই উপোস করে থাকতে হয়।
তাকিয়ে দেখলাম এমন অনেক ভাসমান মানুষ রয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে। অথচ প্রশাসন থেকে তাদের দেখভালের ব্যবস্থা করা হলে, এই মানুষগুলোর পরিচয় ভাসমান হতো না।